নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ওরা হতদরিদ্র!খেটে খাওয়া মানুষ। একদিন কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হয়। বর্তমানে বেকার। কর্মহীন হয়ে পরায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে তাদের। ছেলেমেয়ে নিয়ে কি ভাবে বাঁচবে এই চিন্তায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় আশ্রায়নে বসবাসরত দের হাজার পরিবার। খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ৬ ইউনিয়নে (নবগঠিত মৌডুবী ইউনিয়ন সহ) ১৬ টি আশ্রয়ন রয়েছে। ১৯৯৭ সন থেকে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আশ্রয়নগুলো নির্মিত হয়।ওই থেকে এক হাজারের মতো বাস্তুভিটাহীন পরিবার এইসব আশ্রয়নে বসবাস করে। এরা সবাই হতদরিদ্র। দিন আনে দিন খায়। যেদিন কাজ থাকেনা, সেদিন পেটের খোরাক জোগার করতে ধারদেনা করতে হয় তাদের। করোনার প্রভাবে এখন সবাই কর্মহীন হয়ে পরায়, মানবেতর জীবনযাপন করছে ওই পরিবারগুলো। রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের কাজিরহাওলা, বড়বাইশদিয়ার মধুখালী, চরগঙ্গা আশ্রয়ন ঘুরে দেখা গেছে, ৪ আশ্রয়নে বর্তমানে শতাধিক পরিবার বসবাস করছে।ঘরগুলো বাস অযোগ্য। মেরামত না করায় টিনগুলো জং ধরে খুলে খুলে পরছে। সামান্য বৃষ্টি হলে ঘরের মেঝে ভেসে যায় পানিতে। ঝর হলেতো কথাই নেই। এর মধ্যই জোরাতালি দিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস করছে হতদরিদ্র পরিবারগুলো। পরিবার প্রধানরা সবাই দিনমজুর। কাঁকড়া ধরা, মাছ ধরা, কাঠমিস্ত্রী, রাজমিস্ত্রী, জেলেগিরিসহ বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। একদিন কাজ না করলে জীবিকা চলেনা তাদের। বর্তমানে করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের এই সংকটময় মুহুর্তে মালিকরা তাদের কাজকর্ম স্থগিত রাখায় বেকার হয়ে পরেছে ওইসব মানুষ। অনেক কষ্টে দিন কাটছে তাদের। মধুখালী আশ্রয়নের মোঃ সোনা মিয়া, আঃ জব্বার, সুলতান জোমাদ্দার, রোকেয়া বেগম, কাজলি বেগমসহ অনেকে বলেন, ১৭ বছর ধইরা আমরা এহানে (এখানে) থাহি (থাকি)। বর্তমানে কাজকাম নাই, কিছুই পাইনা। আইজ দুপুরে খাইছি, কাইল কি খামু এ্যহনো (এখনো) জানিনা। খুব করুন অবস্থায় আছি। সব ঘর দিয়া পানি পরে। ভিজা কাঁথা গায় দিয়া থাহি। চরগঙ্গায় থাকা হোচেন মুন্সী, বজলু মিয়াসহ অনেকে বলেন, অনেক বছর ধইরা আমরা আশ্রয়নে থাহি। এ্যাহোন (এখন) কোন কাম পাইনা। খুব করুন অবস্থায় আছি। সাহায্য না পাইলে কোন উপায় দেহিনা। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জানান, মেরামত না করায় ঘরগুলো খুলে পরছে। মেরামতের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানান হয়েছে।
Leave a Reply